বুধবার, ১০ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ০১:৫০ অপরাহ্ন
সকালের সূর্য তখনও পুরোপুরি মাথা তুলেনি। নরসিংদীর ড্রিম হলিডে পার্কে ভিড় জমতে শুরু করেছে শত শত শিক্ষার্থী। কারও চোখে উৎসাহ, কারও মনে স্বপ্ন—আজকের দিনটিই বদলে দিতে পারে তাদের ভবিষ্যৎ। রঙিন টি-শার্টে স্বেচ্ছাসেবীরা দৌড়ঝাঁপ করছে চারপাশে। ঠিক যেন এক উৎসবের আমেজ—এটাই ছিল আইসিটি অলিম্পিয়াড নরসিংদী ২০২৫।
গত ২৩ আগস্ট শনিবার, নরসিংদী আইসিটি ক্লাবের উদ্যোগে আয়োজিত এ প্রতিযোগিতায় অংশ নেয় প্রায় ১,৫০০ শিক্ষার্থী। পাশে ছিলেন ৫০০ অভিভাবক, আর দিনভর অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাওয়া ৫০ জন স্বেচ্ছাসেবী। সব মিলিয়ে ড্রিম হলিডে পার্ক যেন রূপ নেয় প্রযুক্তির এক রঙিন আঙিনায়।
শিক্ষার্থীদের প্রাণচাঞ্চল্য, হাসি-খুশি মুখ আর প্রতিযোগিতার আবেগে সেদিন ভরে ওঠে পুরো প্রাঙ্গণ। বিজয়ীদের হাতে তুলে দেওয়া হয় ল্যাপটপ, ট্যাব ও মোবাইল ফোন। তবে শুধু পুরস্কারপ্রাপ্তরাই নয়, সবার চোখেই আনন্দ—কারণ, আসল বিজয়ী ছিল নরসিংদীর তরুণ প্রজন্ম, যারা আগামী দিনের প্রযুক্তি নির্ভর বাংলাদেশ গড়ার স্বপ্ন বুনছে।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আসিফ মাহমুদ সজিব ভূঁইয়া, উপদেষ্টা, যুব ও ক্রীড়া মন্ত্রণালয় এবং স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়। বিশেষ অতিথি হিসেবে ছিলেন ফয়েজ আহমেদ তাইয়েব, আইসিটি উপদেষ্টা, গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার; সারোয়ার তুষার, যুগ্ম আহবায়ক, এনসিপি; ইঞ্জিনিয়ার মো. মফিজুল ইসলাম, প্রতিষ্ঠাতা, মর্নিং সান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল এন্ড কলেজ প্রমুখ। অনুষ্ঠান উদ্বোধন করেন মাহবুবুর রহমান মনির, পরিচালক, নদী বাংলা গ্রুপ ও আহ্বায়ক নরসিংদী কেন্দ্রীয় স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ফোরাম।
অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীরা বলছিল নিজেদের স্বপ্নের কথা। বিজয়ী এক তরুণ উচ্ছ্বাস ভরে জানালেন, “আজকের এই প্রতিযোগিতা আমাকে সফটওয়্যার ইঞ্জিনিয়ার হওয়ার স্বপ্নে আরও দৃঢ় করেছে।”
একজন অভিভাবক আবেগ নিয়ে বললেন, “আমাদের সন্তানরা যদি এমন প্রতিযোগিতায় অংশ নিতে পারে, তবে তারা গেমস নয়, আসল প্রযুক্তি শেখার পথে এগিয়ে যাবে।”
আয়োজকদের পক্ষে নাঈম ইসলাম বলেন, এই আয়োজন কেবল একটি প্রতিযোগিতা নয়; বরং তরুণদের মেধা বিকাশ, আত্মবিশ্বাস এবং নেতৃত্ব গড়ার এক বড় সুযোগ। এসময় তিনি নিজেদের স্বেচ্ছাসেবীদেরও ভূয়সী প্রশংসা করেন এবং বলেন, “আমাদের স্বেচ্ছাসেবীরা হলো সত্যিকারের হিরো, যাদের প্রচেষ্টা ছাড়া এমন আয়োজন সম্ভব ছিল না।”
দিনশেষে আলোকসজ্জায় ভেসে ওঠা ড্রিম হলিডে পার্কে উচ্ছ্বসিত শিক্ষার্থীরা যখন ছবি তুলছিল, তখনই স্পষ্ট হচ্ছিল—এ আয়োজন শুধু একটি দিনের স্মৃতি নয়, বরং আগামী দিনের স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার পথে এক সাহসী পদক্ষেপ।