শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

শিরোনাম:
মাধবদীতে চালু হলো রয়েল কেক: মানসম্মত খাবার ও রকমারি মিষ্টান্নের নতুন ঠিকানা নরসিংদীর শিবপুরে পবিত্র আজিমুশ্বান ইসলামী জলসা অনুষ্ঠিত সুজন নরসিংদী জেলা কমিটি পুনর্গঠন ও পরিকল্পনা সভা অনুষ্ঠিত মনোহরদীতে সাংবাদিক শাকিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ গণপিটুনীতে মাদক কারবারী নিহতের ঘটনাকে রাজনৈতিক রং লাগাতে একটি মহলের অপচেষ্টা: এস আলমের নিয়োগকৃতদের ছাঁটাইয়ের দাবিতে ইসলামী ব্যাংক মাধবদী শাখার সামনে মানববন্ধন চরদীঘলদী ইউনিয়ন বিএনপির আহ্বায়ক সহ ৩ সদস্যকে কারণ দর্শানোর নোটিশ নরসিংদী জেলা পুলিশের সফল অভিযান, এক সপ্তাহে হত্যাকাণ্ডের আসামীসহ ২০০ জনের অধিক আসামী গ্রেফতার মহিষাশুড়া ইউপি চেয়ারম্যান মুফতি কাউছারের বিরুদ্ধে সাংবাদিকদের মারধর ও হেনস্তার অভিযোগ নরসিংদীতে তরুণদের প্রযুক্তি উৎসব: আইসিটি অলিম্পিয়াড ২০২৫ অনুষ্ঠিত

মনোহরদীতে সাংবাদিক শাকিলের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও চাঁদাবাজির অভিযোগ

দুর্জয় টোয়েন্টিফোর ডটকম ডেস্ক- / ৮ পাঠক
প্রকাশকাল শুক্রবার, ০৭ নভেম্বর ২০২৫, ০৯:১৩ পূর্বাহ্ন

নিজস্ব প্রতিবেদকঃ নরসিংদীর মনোহরদী উপজেলায় কাজী শরিফুল ইসলাম ওরফে শাকিল নামে এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে ভুয়া সাংবাদিকতা, চাঁদাবাজি, হুমকি ও অপপ্রচারের অভিযোগে বিক্ষুব্ধ মনোহরদী উপজেলার রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দ ও সরকারি কর্মকর্তা সহ নানা শ্রেণী-পেশার মানুষ।

স্থানীয় রাজনৈতিক নেতাকর্মী, প্রশাসনিক কর্মকর্তা, শিক্ষক সমাজ, মুক্তিযোদ্ধাসহ সকল শ্রেণি-পেশার মানুষ তার অত্যাচারে অতিষ্ঠ ।
স্থানীয় স্বীকৃত গণমাধ্যমের সংবাদকর্মীরাও সাংবাদিকতার নামে তার অপ-সাংবাদিকতা ও অপপ্রচারে বিব্রত।
সম্প্রতি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সাবেক সংসদ সদস্য ও জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা সরদার সাখাওয়াত হোসেন বকুল ও তাঁর পরিবার নিয়ে অশোভন মন্তব্য ও মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও)-কে উদ্দেশ্য করে “বিদায় ঘণ্টা বেজে গেছে” বলে মন্তব্য করে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে আসেন শাকিল। স্থানীয়দের দাবি, ইউএনও তার অন্যায় দাবি পূরণ না করায় তিনি অপপ্রচারে লিপ্ত হন। এমনকি পূর্বেও বিভিন্ন ইউএনওর বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে এমন অপপ্রচার করেছেন তিনি ।

তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে স্থানীয় এলাকাবাসী বলেন,
‘মনোহরদীর বিষফোড়া ভূঁইফোড় সাংবাদিক শাকিল’। সে দেশের স্বীকৃত কোনো টিভি,পত্রিকা কিংবা অনলাইনে কাজ করে না। তার নিজের ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে নানা বিভ্রান্তি, অপপ্রচার ছড়িয়ে সামাজিকভাবে নানা শ্রেণী -পেশার মানুষকে মানহানি করলেও তার বিরুদ্ধে কোন আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ না করা প্রশাসনের ব্যার্থতা বলে উল্লেখ করেন তারা।
মনোহরদী উপজেলা যুবদলের সদস্য সচিব মাসুদুর রহমান সোহাগ ও পৌর যুবদলের আহ্বায়ক আব্দুস সামাদ বকুল সহ অসংখ্য নেতা কর্মীরা তার বিরুদ্ধে অভিযোগ করে বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের আমলে সে সাবেক শিল্পমন্ত্রী পুত্র মঞ্জুরুল মজিদ মাহমুদ সাদীর ছত্রছায়ায় থেকে বেপরোয়া হয়ে উঠে।
মূলত সে উপদ্রবই এখনো বয়ে বেড়াচ্ছে মনোহরদীর জনগণ।
আ’লীগ আমলে রাজনৈতিক কর্মীর ভূমিকা পালন করলেও ৫ই আগস্টের পর স্থানীয় বিএনপির বলয়ে আশ্রয় নেয়ার চেষ্টা করে ব্যর্থ হলে দলীয় নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে বিষোদগার ছড়ানো শুরু করে সে। তার বিরুদ্ধে নানা মহলে অভিযোগ করেও কোন প্রতিকার মেলেনি ফলে বাধ্য হয়ে স্থানীয় যুবকেরা একাধিকবার তাকে গণ ধোলাই দিলেও সে সুপথে ফিরে আসেনি।

চন্দনবাড়ী ইসলামিয়া কামিল মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আবু রায়হান ভূঁইয়া বলেন, সম্প্রতি একজন সাংবাদিক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল আমার বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অসত্য, ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্যপ্রণোদিত কিছু লেখা প্রকাশ করেছেন। এসব লেখার মাধ্যমে আমার ব্যক্তিগত ও প্রাতিষ্ঠানিক মর্যাদা ক্ষুণ্ণ করার অপচেষ্টা চালানো হয়েছে। একজন শিক্ষক হিসেবে এটি অত্যন্ত দুঃখজনক ও মানহানিকর। তার এই সাইবার আক্রমণের শিকার শুধু আমি একা নই মনোহরদী উপজেলার বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষকদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়তই সে প্রোপাগাণ্ডা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে অবহিত করে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে বলেও জানান তিনি ।

মনোহরদী কারিগরি কলেজের অধ্যক্ষ মোঃ সাইফুল ইসলাম জানান শাকিল আমাদের কলেজের কমিটিতে যুক্ত হতে চেয়েছিল। তার দাবি পূরণ না হওয়ায় সে ইউএনও এবং আমাকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে হুমকি দেওয়া সহ কুৎসা রটানো শুরু করে ।

খিদিরপুর ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি আপন ভূঁইয়া জানান আওয়ামী লীগ সরকারের সময়ে শাকিল সাদীর ভয়ভীতি দেখিয়ে আমার কাছ থেকে ৫০ হাজার টাকা নেয়। ৫ আগস্টের পরেও সে আবারো চাঁদা দাবি করে। না পেয়ে ফেসবুকে আমার নামে মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে। শুধু আমি নই এমন অসংখ্য মানুষ তার কথামতো টাকা না দিলেই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর পোস্ট করে সামাজিকভাবে হেয় প্রতিপন্ন করে।

স্থানীয় সাংবাদিকদের সাথে কথা বলে জানা যায় এই শাকিলকে কেউ সাংবাদিক হিসেবে স্বীকৃতি দেয় না। তার মতো অপসাংবাদিকের কারণে সাংবাদিকতা পেশার সুনাম ক্ষুণ্ণ হচ্ছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মানুষের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালিয়ে অর্থ আদায় করাই তার মূল লক্ষ্য । সবচেয়ে কষ্টের বিষয় হচ্ছে তার এই সাইবার হামলার ভয়ে তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকার পরও পুলিশ নীরব ভূমিকা পালন করছে।

মনোহরদী প্রেসক্লাবের সভাপতি ও পৌর জামায়াতের আমির আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আমি জাঁকজমকভাবে একজন সাবেক জেলা প্রশাসকের বোনের মেয়েকে বিয়ে করেছি। অথছ কথিত সাংবাদিক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল ওই বিয়ে নিয়ে মনোহরদী বাজার মসজিদের মুয়াজ্জিনকে জড়িয়ে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কুরুচিপূর্ণ ও মিথ্যা মন্তব্য প্রকাশ করেছে। তার উদ্দেশ্য মানুষের বিরুদ্ধে কাল্পনিক পোস্ট দিয়ে সামাজিকভাবে মানহানির ভয় দেখিয়ে অর্থ উপার্জন করা।

নরসিংদী জেলা বিএনপির সিনিয়র সহ-সভাপতি সাবেক এমপি সরদার শাখাওয়াত হোসেন বকুল, মনোহরদী উপজেলা বিএনপি’র সদস্য সচিব আমিনুর রহমান সরকার দোলন সহ অসংখ্য বিএনপি ও জামাতে ইসলামী নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিভ্রান্তিকর মিথ্যা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করেই যাচ্ছেন সে। মূলত সে আওয়ামী দোসর। এ ধরনের মানুষের কারণেই সমাজে নৈতিক অবক্ষয় তৈরি হয়।

এছাড়া শাকিলের বিরুদ্ধে পূর্বেও মাদক ব্যবসা, চাঁদাবাজি ছিনতাই ও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে একাধিক মামলা রয়েছে বলে জানা যায়। এক কথায় মন্ত্রীপুত্র সাদীর রাজত্বের সেনাপতি ছিলেন এই কথিত সাংবাদিক কাজী শরিফুল ইসলাম শাকিল।
এমনকি জাতীয় পত্রিকা বাংলাদেশ প্রতিদিন তার বিরুদ্ধে প্রতারক হিসেবে বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা রয়েছে।ধানমন্ডি থানার মামলা নং ৪ (২ সেপ্টেম্বর ২০১৫)
মনোহরদী থানার মামলা নং ৯/৭৯ (১২ এপ্রিল ২০২০)
মনোহরদী থানার মামলা নং ৭/৭৬ (৮ আগস্ট ২০২২)
তাছাড়াও এখনও তার বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ তদন্তাধীন রয়েছে।

এসব অভিযোগের বিষয়ে জানতে শাকিলের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে, তিনি নিজেকে পিআইবি (প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশ) থেকে পাশ করা সাংবাদিক দাবি করেন। মানুষকে হয়রানি ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে পোস্ট করে ব্ল্যাকমেইল করার বিষয়ে প্রশ্ন করলে তিনি সাংবাদিকের মোবাইল নাম্বার ও হোয়াটসঅ্যাপে রিপোর্টারকে ব্লক করে দেন।

এই বিষয়ে মনোহরদী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এম এ মুহাইমিন আল জিহান জানান। বিষয়টি আমি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি, তাদের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।